থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক গোপন নথি ফাঁস হওয়ার পর চীনের সিনোভ্যাক কোম্পানির করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গোপন ওই নথি অনুযায়ী, থাইল্যান্ডে যেসব স্বাস্থ্যকর্মী সিনোভ্যাকের দুই ডোজ নিয়েছেন তাদের বুস্টার ডোজ হিসেবে কোনো এমআরএনএ (mRNA) ভ্যাকসিন দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকক পোস্ট, রয়টার্সের খবর।
একই নথিতে কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, বুস্টার ডোজ হিসেবে এখনই যেন ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন দেওয়া না হয়, কারণ এতে সিনোভ্যাকের কার্যকারিতা নিয়ে জনমনে সন্দেহ তৈরি হবে।
থাইল্যান্ডের গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নথিটি আসল বলে স্বীকার করেছেন সেদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। পরে অবশ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নথিটি নিয়ে ভিন্ন ব্যাখ্যা দেয়। থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আনুতিনে এ ব্যাপারে বলেন, নথিতে বুস্টার ডোজ দেওয়ার সুপারিশটি শুধুই একটি মতামত। ভ্যাকসিন নীতি নির্ধারণের জন্য দেশে বিশেষজ্ঞ প্যানেল রয়েছে। সিনোভ্যাকের দুই ডোজ কার্যকর। ইতিমধ্যে ভালো ফলও পাওয়া গেছে।
থাইল্যান্ডের গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, এ নথিটি গত ৩০ জুন থাইল্যান্ডের তিনটি কমিটির বৈঠকের সারাংশ। ওই তিন কমিটি দেশটিতে মহামারি দমনে কাজ করছে।
নথি অনুযায়ী, দেশটিতে চলতি মাসে ১৫ লাখ ডোজ ফাইজারের ভ্যাকসিন পৌঁছার কথা রয়েছে। এছাড়া আগামী কয়েক মাসের মধ্যে প্রায় ২ কোটি ডোজ ফাইজারের ভ্যাকসিন পৌঁছাবে। এসব ভ্যাকসিন কাদের দেওয়া হবে সে ব্যাপারে আলোচনা করা হয়েছে ওই বৈঠকে।
থাইল্যান্ডের গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, নথির এ তথ্যটি বিস্ময়কর। কেননা সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, বছরের শেষ ভাগে থাইল্যান্ডে ২ কোটি ডোজ ফাইজারের ভ্যাকসিন পৌঁছার কথা রয়েছে। তবে চলতি মাসেই ১৫ লাখ ফাইজারের ভ্যাকসিন থাইল্যান্ডে আসছে, এটা সরকার কখনও ঘোষণা করেনি।
ফাঁস হওয়া ওই নথিতে এক কর্মকর্তা সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের দুই ডোজের পর একটি এমআরএনএ ভ্যাকসিন বুস্টার ডোজ হিসেবে প্রয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন।
এসব পরামর্শ অনুযায়ী থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যে ফাইজার-বায়োএনটেক বা মডার্নার এমআরএনএ ভ্যাকসিন প্রয়োগের দাবি তুলেছেন। তারা থাইল্যান্ডে আরও কয়েকটি কোম্পানির ভ্যাকসিন সহজলভ্য করারও দাবি করেন। সরকার এ ব্যাপারে জানিয়েছে, শীঘ্রই ফাইজার, মডার্নাসহ কয়েকটি কোম্পানির ভ্যাকসিন থাইল্যান্ডে পৌঁছাবে। ফলে এমআরএনএ ভ্যাকসিনের চাহিদা পূরণ হবে।
ওই নথি অনুযায়ী বৈঠকে এক কর্মকর্তা মন্তব্য করেন, জুলাইয়ে আসা ফাইজারের ভ্যাকসিনগুলো বুস্টার ডোজ হিসেবে যেন না দেওয়া হয়, কারণ এতে মানুষের মনে সিনোভ্যাকের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। বিষয়টি সামাল দেওয়া কঠিন হবে।
নথি ফাঁস হওয়ার পর থাইল্যান্ডের সামাজিক মাধ্যমে 'স্বাস্থ্যকর্মীদের ফাইজারের ভ্যাকসিন দিন' হ্যাশট্যাগের ঝড় উঠেছে। সোমবার ৬,২৪,০০০ হাজারের বেশি টুইটে এ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা হয়েছে।
The post থাই সরকারের গোপন নথি ফাঁস, সিনোভ্যাকের কার্যকারিতা নিয়া প্রশ্ন appeared first on Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment.
Thank you to read this post.
0 Comments