
ঢাকা: কুড়িল বিশ্বরোড থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তাটি হচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দৃষ্টিনন্দন এক্সপ্রেসওয়ে। এই রাস্তা পুরোপুরি চালু হলে বদলে যাবে পূর্বাঞ্চলের চিত্র। এই ৮ লেন সড়কের এই দৃষ্টিনন্দন রাস্তাটির দুই পাশেই থাকবে পর্যটনবান্ধব সবকিছু।
বর্তমানে প্রকল্পটির ব্যয় দাঁড়িয়েছে, ১৪ হাজার ৩২৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।
গত রোববার (১৯ ডিসেম্বর) কুড়িল বিশ্বরোড থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা যায়, পুরো রাস্তা জুড়ে নির্মাণ কাজ চলছে পুরোদমে। দিনরাত নির্মাণ শ্রমিকরা এই এক্সপ্রেসওয়েটির নির্মাণ কাজ দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে নিচ্ছেন।
অপরদিকে, বাণিজ্য মেলাকে সামনে রেখে এই এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে আর দ্রুত গতিতে। শ্রমিক কর্মচারীদের যেন দম ফেলানোর সময় নেই।

রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী উজ্জ্বল মল্লিক সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা বাণিজ্য মেলাকে সামনে রেখে দিনরাত কাজ করছি। কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। মেলাকে ঘিরে আমাদের পরিকল্পনা ব্যাপক। মেলায় দর্শনার্থীদের যেন কোনো ধরনের ভোগান্তি না হয় সেটা মাথায় নিয়েই কাজ করা হচ্ছে।’
পুরো রাস্তায় কাজ চলছে। বাণিজ্য মেলার আগে কিভাবে রাস্তার কাজ শেষ করা সম্ভব জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা আরও জানান, আমরা ৩১ ডিসেম্বরের আগে ২ পাশে ২ লেন করে খুলে দেবো। মানে হচ্ছে মেলা উপলক্ষে ৮ লেনের মধ্যে ৪ লেন খুলে দেওয়া হবে। বাকি ৪ লেনের কাজ শেষ হতে আরও ২-৩ মাস সময় লাগবে। আমাদের আন্তরিকার কোনো ঘাটতি নেই। যারা এক্সপ্রেসওয়ের কাজ করছেন তাদেরও সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব আমরা কাজ শেষ করব।
সরেজমিনে দেখা যায়, ৮ লেনের এই এক্সপ্রেসওয়ের দুই পাশে করা হচ্ছে ১০০ ফুট দৃষ্টিনন্দন খাল এবং পাশ দিয়েই রাস্তা। আর রাস্তায় নির্মাণ কাজ করতে দেখা গিয়েছে, বড়বড় ক্রেন, লিফটার, ট্রাক ড্রেজার। যার মাধ্যমে এই এক্সপ্রেসওয়ের কাজ করা হচ্ছে। এই ৮ লেনের রাস্তাটি চালু হলে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত ৫-৭ মিনিটে যাওয়া যাবে অনায়াসে।

পুরো এলাকার কার্যক্রম নিয়ে কথা হয় পূর্বাঞ্চলের বাসিন্দা আমজাদ উল্লাহর সঙ্গে। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমানে ধুলো-বালি আর কাজের শব্দে কিছুটা হলেও বিরক্ত হতে হয়। কিন্তু এই সবকিছু ভুলে যাব, যখন এই প্রকল্প মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে আর সৌন্দর্যের ডানা মেলে তার সৌন্দর্য দেখাবে। আমরা অপেক্ষায় রয়েছি এতবড় প্রকল্পের রূপ দেখার জন্য। এদিকে বর্তমানে কিছুটা নয় অনেক ভোগান্তি আমাদের। রাস্তাঘাট ভাঙা, গাড়ি আসতে চায় না। বিআরটিসির বাসই আমাদের ভরসা। তাও ঠিকমতো পাওয়া যায় না। প্রকল্প চালু হলে এই সমস্যাও দূর হবে বলে আশা করি।’
প্রকল্প সূত্রে আরও জানা গেছে, কুড়িল থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত ৮ লেনের রাস্তা হবে। দুই পাশে ১০০ ফুট করে দু’টি খাল। দু’টি খালেরই দুই পাশে থাকছে সার্ভিস রোড। সার্ভিস রোডেও থাকবে একাধিক লেন। তার বাইরেও থাকছে বিভিন্ন আবাসিক এলাকা থেকে যুক্ত হওয়ার জন্য গেটওয়ে। এর মানে হচ্ছে এক্সপ্রেসওয়েতে কোন গাড়ি থামবে না। প্রতিটি গাড়ি চলবে নিজস্ব গতিতে। আর গাড়িগুলোরও কোন গতি কমানো লাগবে না তারা লেন পরিবর্তন করে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে যেতে পারবে।

এছাড়া এই এক্সপ্রেসওয়েতে নির্মাণ করা হচ্ছে ১০টি বড় সেতু। হাতিরঝিলের আদলে ১৩টি আর্চ ব্রিজ। বৃষ্টির পানি নিস্কাশনে ৪ কিলোমিটার নালা, দু’টি কালভার্ট, ১২টি ওয়াটার বাসস্ট্যান্ড ও ৪টি পাতাল পথ।
শুধু তাই নয়, দুই পাশের খালে চলবে ওয়াটার বাস যা মূলত পর্যটকদের জন্যই চালু করা হবে। খালের দুই পাশে তৈরি করা হবে সবুজ ওয়াকওয়ে। আর এখানেই এক সঙ্গে ৪০ হাজারের বেশি পর্যটক প্রকল্পের সৌন্দর্য দেখতে পারবেন একসঙ্গে।
The post দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে দেশের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন সড়কের কাজ appeared first on Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment.
Thank you to read this post.
0 Comments